শেরপুরে বৃদ্ধ ভিক্ষুক দম্পতির ভাগ্যে জুটেনি একটি সরকারি ঘর
মইনুল হোসেন প্লাবন, শেরপুর : শেরপুরে বৃৃদ্ধ ভিক্ষুক দম্পতি মারফত আলী (৮০) ও কাজলী বেগমের (৬০) ভাগ্যে জুটেনি একটি সরকারি ঘর। তাদের বসতবাড়ীর ঘরটিও বসবাসের অনুপযোগী। ওই ভিক্ষুক দম্পতির বাড়ি শেরপুর সদর উপজেলার পাকুড়িয়া ইউনিয়নের পূর্বপাড়া গ্রামে।
জানা যায়, নিঃসন্তান কাজলী তার স্বামী মারফতকে সাথে নিয়ে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ভিক্ষাবৃত্তি করে এক মুঠো করে চাউল সংগ্রহ করে দিন চালান। অর্থের অভাবে মেরামত করতে পারছেন না একখন্ড জমিতে পড়ে থাকা তাদের ভাঙ্গা ঘরটি। ঝড়বৃষ্টি হলে ঘরে পানি পড়ে ও যে কোন সময় ঘরটি ভেঙ্গে গিয়ে বড় ধরনের দূর্ঘটনা হতে পারে। একটি সরকারি ঘর বরাদ্দ চেয়ে গত কয়েক বছর জনপ্রতিনিধিদের কাছে বহু আবেদন-নিবেদন করেছেন। কিন্তু কোন কাজ হয়নি !
কোথাও থেকে চেয়ে নিয়ে আসা ছেঁড়া কাপড়, কিছু খড়, ভাঙ্গা টুকরো টিন, পলিথিন দিয়ে মোড়ানো ঘরে বসবাস করেন বৃদ্ধ ভিক্ষুক দম্পতি মারফত ও কাজলী বেগম। বর্তমানে তারা খোলা আকাশের নিচে বসবাস করলেও এ বিষয়টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান-মেম্বার বা স্থানীয় কোনো নেতার দৃষ্টি পরেনি। কিন্তু ওই হৃদয়বিদারক ঘটনাটি সংবাদকর্মীর চোখে না পড়লে এ করুন কাহিনীটি ধামাচাপাই পরে থাকতো।
ভিক্ষুক মারফত আলী অশ্র ভেজা কন্ঠে জানান, আমরা জেনেছি- বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা অনেক অসহায় মানুষকে ঘর দিয়েছে। এলাকার জনপ্রতিনিধিদেরকে টাকা দিতে না পারায় সরকারি ঘর ভাগ্যে জুটেনি। সমাজপতিদের কাছে অনেক কান্না করেও বসবাস করার মত একটি ঘরের ব্যবস্থা হয়নি। এখন শেষ ভরসা প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা। কাজলী বেগম বলেন, প্রায় ৩ বছর পূর্বে এক ইউপি সদস্য কাছে একটি ঘর বরাদ্দ দেওয়ার জন্য আবেদন করেন। কিন্তু কোন কাজ হয়নি। এরপর স্থানীয় এক নেতা ঘর নিমার্ণের করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও গাড়ী ভাড়া বাবদ ৪ হাজার টাকা দাবি করেন। ওই টাকা দিতে না পারায় তাদের ভাগ্যে জুটেনি সরকারের দেওয়া বরাদ্ধকৃত ঘর। প্রধানমন্ত্রীর কাছে বৃদ্ধ ভিক্ষুক মারফত ও কাজলীর দাবি করে বলেন, আমরা আশা করছি- বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা আমাদের একটা ব্যবস্থা করে দিবেন।
এ ব্যপারে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব হায়দার আলীর সাথে মোঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আমার এলাকায় এমন অসহায় পরিবার আছে তা আমি জানতাম না। বরাদ্দ পেলে আমি দ্রæতই তাদের জন্য একটি সরকারি ঘরের ব্যবস্থা করে দিবো।