নালিতাবাড়ী সীমান্তে ফের বন্য হাতির উৎপাত
মিজানুর রহমান, নালিতাবাড়ী প্রতিনিধি: শেরপুরের নালিতাবাড়ী সীমান্তবর্তী গারো পাহাড়ে অব্যাহত হাতির উৎপাত । নির্ঘুম রাত কাটছে পাহাড়িদের। ক্ষেতের ফসল খেয়েছে বেশ। কৃষক বাকী ফসল কেটে গোলায় উঠিয়েছে। ক্ষেতে এখন আর ধান নেই। তাই হাতির লক্ষ্য এখন ফল গাছের দিকে। আম-কাঁঠাল খেয়ে সাবাড় করে দিচ্ছে বন্য হাতির দল। সূর্য পশ্চিম দিকে হেলে যাওয়ার পর থেকেই বন্যহাতির দলটি ভারতীয় সীমান্তের গহীন অরণ্য থেকে বের হয়ে আসে। প্রতি রাতেই প্রবেশ করছে লোকালয়ে। হাতির দল সারারাত অবস্থান করছে লোকালয়ে। বাড়ির আশপাশে। কলাগাছ ও আম, কাঁঠাল খাচ্ছে সারারাত। পাহাড়িবাসী দল বেঁধে ঢাক ডোল পিটিয়ে, বাঁশি বাজিয়ে, হৈ হুল্লুর করে ধাওয়া করলেও সহজে পিছু হঁটেনা হাতিগুলো। হাতিরা তাদের ইচ্ছেমতো আসে এবং চলে যায়।
এলাকাবাসী জানায়, রোববার সন্ধ্যা থেকে ভোর রাত পর্যন্ত বন্যহাতির দল আক্রমণ চালিয়ে কাঁঠাল খেয়ে সাবাড় করেছে অনেকের।
নালিতাবাড়ী বারোমারী মিশনের খুঁটি উপড়িয়ে কাঁটাতার মাটির সঙ্গে মিশিয়ে হাতির দল প্রবেশ করে ভিতরে। গাছের সব কাঁঠাল খেয়ে ফেলে। শূড় দিয়ে যতটুকু নাগাল পাওয়া যায় ততটুকু উঁচু থেকে কাঁঠাল ছিরে নিয়ে খায়। আবার কোনো কোনো গাছ উপড়িয়ে ফেলেছে। পরে মিশনের পুকুরে নেমে পানিতে অবস্থান করে গভীর রাত পর্যন্ত। এতে পুকুরের মাছ মরে ভেসে ওঠেছে। ভোরে এলাকাবাসী ধাওয়া করে।
আজ সোমবার রাত থেকে সকাল ১১টা পর্যন্ত হাতির সঙ্গে যুদ্ধ করে স্থানীয়রা। পরে নিজ ইচ্ছায় পাহাড়ি পথ বেয়ে চলে যায় হাতি গহীন জঙ্গলে। হাতির পিছু ছুটে গিয়ে দেখা গেছে তারা গহীন অরণ্যের দাওধারা কাটাবাড়ি অঞ্চলের ভারতের মেঘালয় রাজ্যের সীমান্ত ঘেঁষা লালটিলার ঢালুতে আশ্রয় নিয়ে সেখান থেকেই হুংকার করছেন।
নয়াবিল ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো: রবিউল ইসলাম জানান, দুই-তিন দিন ধরে বন্যহাতির দল তাদের এলাকায় আক্রমণ চালিয়েছে। তার নিজ বাড়িতে হাতি প্রবেশ করে কলাগাছ খায়। তাছাড়া ডালুকোনা গ্রামের সান্তনা, মোহাম্মদ আলী, প্রনিলা নেংমিঞ্জা এর বাড়িতে প্রবেশ করে আম,কাঁঠাল ও কলাগাছ খেয়ে সাবাড় করেছে হাতি।
বারোমারী মিশনের ধর্মীয় শিক্ষক ফ্রান্সিস চাম্বু গং বলেন, হিংস্র এই বন্য হাতির দল রাতে তাদের মিশনের কাঁটাতার ধুমড়ে-মুচরে মাটিতে মিশিয়ে দিয়ে প্রবেশ করে অভ্যন্তরে। গাছের কাঁঠাল খেয়ে সাবাড় করে পুকুরে নেমে গোসল করে। এতে পুকুরের মাছও মরে ভেসে ওঠে। ভোরে তারা এলাকাবাসী সবাই মিলে ধাওয়া করে হাতির দলকে। দীর্ঘক্ষণ ধাওয়া করতে করতে হাতির দলটি পিছু হঁটে পাহাড়ি রাস্তায় গহীন অরণ্যে গিয়ে অবস্থান নেয়।
ট্রাইবাল ওয়েল ফেয়ার এসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান লুইস নেংমিঞ্জা বলেন, হাতির অত্যাচারে আমরা অতিষ্ঠ। সারারাত জেগে থাকতে হয় হাতির কারণে। এখন ক্ষেতের ধান শেষ। তাই হাতি অত্যাচার চালিয়েছে লোকালয়ে। আম, কাঁঠাল, কলাগাছ খেয়ে সাবাড় করছে সব। তাই সরকারী উদ্যোগে হাতি প্রতিরোধের ব্যবস্থা করা দরকার। অন্যথায় অব্যাহত হাতির অত্যাচারে পাহাড়ি জমি একসময় থাকবে পতিত। ধ্বংস হয়ে যাবে ফল জাতীয় গাছ। এমনকি বসতবাড়িতে আক্রমণ করলে আমাদের কোনো অস্তিত্ব থাকবে না।
ভাল লাগলে শেয়ার করুন
- Click to share on Facebook (Opens in new window)
- Click to share on Twitter (Opens in new window)
- Share on Skype (Opens in new window)
- Click to share on Google+ (Opens in new window)
- Click to share on WhatsApp (Opens in new window)
- Click to share on Telegram (Opens in new window)
- Click to share on LinkedIn (Opens in new window)
- Click to share on Pocket (Opens in new window)
- Click to email this to a friend (Opens in new window)
- Click to print (Opens in new window)