সিদ্দিক থেকে বিচ্ছেদের পথে হাঁটলেন মিম
বিনোদন ডেস্ক:
অবশেষে বিচ্ছেদের পথে হাটলেন মডেল-অভিনেত্রী মারিয়া মিম। ব্যক্তি-স্বাধীনতায় বাধা দেয়া, নির্যাতন ও পরকীয়ার অভিযোগ তুলে অভিনেতা সিদ্দিকুর রহমানকে ডিভোর্স দিলেন তিনি।
সোমবার (২১ অক্টোবর) একটি বিস্তারিত ফেসবুক পোস্টে মারিয়া মিম তার ডিভোর্সের প্রেক্ষাপট ব্যাখ্যা করেন।
এর আগে শনিবার (১৯ অক্টোবর) তালাকনামায় স্বাক্ষর করেছেন মিম। কাগজটি সিদ্দিকের কাছে পৌঁছাবে ২৩ অক্টোবর। তবে দু’জনের সিদ্ধান্তেই ডিভোর্স হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
২০১২ সালের ২৪ মে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত স্পেনের নাগরিক মারিয়া মিম ও অভিনেতা সিদ্দিকের বিয়ে হয়। ২০১৩ সালের ২৫ জুন মাসে তাদের সংসারে জন্ম নেয় একমাত্র পুত্র সন্তান। বিয়ের সাত বছর পর তাদের সেই ঘর ভাঙলো সম্পর্কের টানাপোড়েনে।
কিছুদিন আগেই একটি বিজ্ঞাপনের কাজ থেকে মিমের বাদ পড়া নিয়ে শোরগোল পড়ে যায়। মিমের অভিযোগ তার স্বামীর কারণেই তাকে এ কাজ থেকে বাদ দেয়া হয়েছে। সিদ্দিক নিজেও একজন শোবিজের মানুষ হওয়ার পরও স্বামী হিসেবে তার কাছ থেকে কোনো সহযোগিতা পান না বলে অভিযোগ করেন মিম।
যদিও সিদ্দিক এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তার বক্তব্য, মিডিয়ার কাজ নয়, বরং অন্য কোনো কারণেই মিম তাকে ডিভোর্স দিতে চায়।
সোমবার (২১ অক্টোবর) ফেসবুকে একটি পোস্ট লিখে ব্যক্তিগত জীবনের কষ্ট ও বঞ্চনার কথা জানিয়েছেন মারিয়া মিম। কোন প্রেক্ষিতে কেন তিনি বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, সেটাও জানান তিনি।
ফেসবুকে মিম লেখেন, ‘আজ আমি একজন মেয়ে বলেই আমাকে সব কিছু মেনে নিতে হবে। মেনে নিতে হবে সকল অত্যাচার, সহ্য করতে হবে সকল মানসিক এবং শারীরিক নির্যাতন। শুনতে হবে সকল মিথ্যা অপবাদ। রাতের পর রাত, দিনের পর দিন সবকিছু সহ্য করেছি এবং একা একা কেঁদেছি।
অনেক আগেই চেয়েছিলাম সম্পর্কটা শেষ করে দেই, তখনই বাধা দেওয়া হয়েছে কারণ তুমি একজন নারী। তোমার সবকিছু এডজাস্ট এবং স্যাক্রিফাইস করতে হবে। একটা মেয়ে তার সবকিছু ছেড়ে দিয়ে একটা নতুন মানুষের সাথে ঘর বাঁধে, স্বপ্ন দেখে সারা জীবন একসাথে থাকবে, স্বপ্ন দেখে সুন্দর একটা সংসার। কিন্তু সেই মানুষটা যখন বদলে যায় এবং ভুলে যায় স্ত্রীর প্রতি সমস্ত দায়িত্ববোধ এবং কর্তব্যবোধ তখন হতাশা আসে।
কীভাবে একজন স্ত্রী মেনে নিতে পারে তার স্বামীর সাথে অন্য মেয়ের সম্পর্ক, কীভাবে মেনে নিতে পারে রাতের পর রাত স্বামীর বাসায় না ফেরা। কারণ সে একজন নারী এবং নারী বলেই সবকিছু চোখ বন্ধ করে সহ্য করতে হবে। কিন্তু আর কত সহ্য করবো, আর কতবার নির্যাতনের শিকার হবো।
তাই সবকিছুর পরে অনেক চিন্তা ভাবনা করে আমি ডিভোর্সের সিদ্ধান্ত নিই। কারণ আমিও মানুষ, আমারও সুন্দরভাবে বেঁচে থাকার অধিকার আছে। অবশেষে বাধ্য হয়ে বিবাহ বিচ্ছেদের কাগজে স্বাক্ষর করে জমা দিয়েছি। একটা দীর্ঘদিনের বেদনা, কান্না এবং চাপা কষ্ট সবকিছু নিয়ে সিদ্দিকুর রহমানের সাথে আমি আমার সম্পর্ক ছিন্ন করেছি।
আমাদের সেপারেশনের পর থেকে সিদ্দিকুর রহমান আমার একমাত্র আদরের সন্তান আরশ হোসাইনের সাথে দেখা করতে দেয় না এবং কথাও বলতে দেয় না। এই জন্য আমি সিদ্দিকুর রহমানকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠাবো যেন আমার বাচ্চা আমার কাছে থাকে। একমাত্র একটা মা জানে তার সন্তানের সাথে দেখা না করার, কথা না বলা কতটা কষ্টের এবং দুঃখের।’