ঘুরে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশের জয়

ক্রীড়া ডেস্ক:
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশই ফেভারিট। কিন্তু সাকিব-তামিম না থাকায় হয়তো অজানা কোনো শঙ্কা কাজ করছিল। তবে মাঠে সাকিব-তামিমের অনুপস্থিতি টের পাওয়া যায়নি। ব্যাটিংয়ে যদিও বাংলাদেশ প্রথমে পরপর উইকেট হারিয়ে চাপে পড়েছিল কিন্তু পরে ইমরুল কায়েস ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের ১২৭ রানের জুটিতে ভালো স্কোর গড়ে টাইগাররা। পরে জিম্বাবুয়ের ব্যাটিং লাইন-আপ ধসিয়ে দেন মেহেদী হাসান মিরাজ ও নাজমুল ইসলাম অপু। যার ফলে এই ম্যাচে জয় নিয়েই মাঠ ছেড়েছে মাশরাফি বাহিনী। জিম্বাবুয়েকে ২৮ রানে হারিয়েছে টাইগাররা।
রবিবার মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচটিতে বাংলাদেশের দেয়া ২৭২ রানের জয়ের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ২৪৩ রান সংগ্রহ করে জিম্বাবুয়ে। সফরকারীদের পক্ষে সর্বোচ্চ ৫০ রান করে অপরাজিত থাকেন শন উইলিয়ামস। বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে মেহেদী হাসান মিরাজ ৩টি, নাজমুল ইসলাম অপু ২টি, মোস্তাফিজুর রহমান ১টি ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ১টি করে উইকেট
জিম্বাবুয়ের যে পরিস্থিতি ছিল তাতে বাংলাদেশ আরো আগে জয় তুলে নিতে পারতো। কিন্তু নবম উইকেট জুটিতে ৬৭ রানের পার্টনারশিপ গড়েন শন উইলিয়ামস ও কাইল জারভিস। ব্যক্তিগত অর্ধশত করে অপরাজিত থাকেন শন উইলিয়ামস। ৩৩ বলে ৩৭ রান করে আউট হন কাইল জারভিস।
ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতে একটু মেরে খেলতে থাকে জিম্বাবুয়ে। রানের চাকাটা দ্রুত এগিয়ে নিতে থাকেন জিম্বাবুয়ের দুই ওপেনার। কিন্তু মোস্তাফিজুর রহমান এই জুটিকে বেশি বাড়তে দেননি। ইনিংসে প্রথমবারের মতো বোলিংয়ে এসেই উইকেট শিকার করেন ‘কাটার মাস্টার’।
ইনিংসের অষ্টম ওভারে ওপেনার চেফাস ঝুওয়াওকে বোল্ড করে সাজঘরে ফেরান এই টাইগার পেসার। ২৪ বল খেলে ৩৫ রান করেন ঝুওয়াও। মোস্তাফিজুর রহমানের পর আঘাত হানেন নাজমুল ইসলাম অপু। ইনিংসের ১১তম ওভারে ব্রেন্ডন টেইলরকে বোল্ড করেন তিনি। ১৩ বল খেলে ৫ রান করেন টেইলর।
এরপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট শিকার করতে থাকে বাংলাদেশের বোলাররা। দলীয় ১০০ রানের মধ্যে জিম্বাবুয়ে পাঁচটি উইকেট হারায়। এরপর শন উইলিয়ামস ও পিটার মুর প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু তারা বেশি দূর যেতে পারেননি। তারা দুজন ৪৫ রানের পার্টনারশিপ গড়েন। এই জুটি ভাঙেন মেহেদী হাসান মিরাজ। মূলত এখানেই জিম্বাবুয়ের জয়ের সম্ভাবনা শেষ হয়ে যায়।
এদিন প্রথমে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে আট উইকেটে ২৭১ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। দলের পক্ষে ওপেনার ইমরুল কায়েস সেঞ্চুরি করেন। ১৪০ বলে ১৪৪ রান করেন তিনি। এই রান করার পথে তিনি চার মারেন ১৩টি, ছক্কা হাঁকান ছয়টি। ওয়ানডে ক্রিকেটে ইমরুল কায়েসের এটি সর্বোচ্চ রানের ইনিংস। এর আগে একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তার এক ইনিংসে সর্বোচ্চ রান ছিল ১১২ রান। এদিন ইমরুল কায়েস ওপেনিংয়ে নেমে ৪৯তম ওভারে আউট হন।
ওয়ানডে ক্রিকেটে ইমরুল কায়েসের এটি তৃতীয় সেঞ্চুরি। তিনি সর্বশেষ সেঞ্চুরি করেছিলেন ২০১৬ সালের ৭ অক্টোবর। মিরপুরে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওই ম্যাচে ১১২ রান করেছিলেন তিনি। ২০১০ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি ক্রাইস্টচার্চে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি করেছিলেন কায়েস।
ইমরুল কায়েস ছাড়া অন্যদের মধ্যে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ৫০ ও মোহাম্মদ মিথুন ৩৭ রান করেন। ওয়ানডেতে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের এটি প্রথম অর্ধশত। বাংলাদেশ ব্যাটিংয়ে নেমে দলীয় ১৩৯ রানে ছয় উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল। এরপর সপ্তম উইকেট জুটিতে ১২৭ রানের পার্টনারশিপ গড়েন। বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে ওয়ানডেতে সপ্তম উইকেট জুটিতে ইমরুল-সাইফউদ্দিনের এই জুটিই এখন সেরা।
জিম্বাবুয়ের বোলারদের মধ্যে কাইল জারভিস ৪টি, টেন্ডাই সাতারা ৩টি ও ব্রান্ডন মাভুতা ১টি করে উইকেট শিকার করেন। আগামী ২৪ অক্টোবর চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচ। এই ভেন্যুতেই ২৬ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হবে সিরিজের তৃতীয় তথা শেষ ওয়ানডে ম্যাচ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ফল: ২৮ রানে জয়ী বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ ইনিংস: ২৭১/৮ (৫০ ওভার)
(লিটন দাস ৪, ইমরুল কায়েস ১৪৪, ফজলে মাহমুদ রাব্বী ০, মুশফিকুর রহিম ১৫, মোহাম্মদ মিথুন ৩৭, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ০, মেহেদী হাসান মিরাজ ১, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ৫০, মাশরাফি বিন মুর্তজা ২*, মোস্তাফিজুর রহমান ১*; কাইল জারভিস ৪/৩৭, টেন্ডাই সাতারা ৩/৫৫, ডোনাল্ড তিরিপানো ০/৬০, ব্রান্ডন মাভুতা ১/৪৮, সিকান্দার রাজা ০/৩৭, শন উইলিয়ামস ০/৩২)।
জিম্বাবুয়ে ইনিংস: ২৪৩/৯ (৫০ ওভার)
(হ্যামিলটন মাসাকাদজা ২১, চেফাস ঝুওয়াও ৩৫, ব্রেন্ডন টেইলর ৫, ক্রেইগ আরভিন ২৪, সিকান্দার রাজা ৭, শন উইলিয়ামস ৫০*, পিটার মুর ২৬, ডোনাল্ড তিরিপানো ২, ব্রান্ডন মাভুতা ২০, কাইল জারভিস ৩৭, টেন্ডাই সাতারা ২*; মাশরাফি বিন মুর্তজা ০/৫৫, মেহেদী হাসান মিরাজ ৩/৪৬, মোস্তাফিজুর রহমান ১/২৯, নাজমুল ইসলাম অপু ২/৩৮, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ০/২৯, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ১/২৪, ফজলে মাহমুদ ০/১৬)।
প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচ: ইমরুল কায়েস (বাংলাদেশ)।
ভাল লাগলে শেয়ার করুন
- Click to share on Facebook (Opens in new window)
- Click to share on Twitter (Opens in new window)
- Share on Skype (Opens in new window)
- Click to share on Google+ (Opens in new window)
- Click to share on WhatsApp (Opens in new window)
- Click to share on Telegram (Opens in new window)
- Click to share on LinkedIn (Opens in new window)
- Click to share on Pocket (Opens in new window)
- Click to email this to a friend (Opens in new window)
- Click to print (Opens in new window)