শেরপুরে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে বন্যহাতির মৃত্যু, আটক-১
শেরপুর প্রতিনিধি : শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার সীমান্তবর্তী বাতকুচি এলাকায় বন্যহাতির দল খাদ্যের সন্ধানে গভীর জঙ্গল থেকে আমন ফসলের মাঠে নেমে আসলে কৃষকের পাতানো জেনারেটরের বৈদ্যুতিক তারে জড়িয়ে একটি মাদি বন্যহাতির মৃত্যু হয়েছে । ৩১ অক্টোবর বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার বাতকুচি রাবার বাগান এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। মধুটিলা ফরেস্ট রেঞ্জ কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম ও এলিফ্যান্ট রেসপন্স টিমের সদস্যরা ১ নভেম্বর শুক্রবার সকালে মৃত বন্য হাতিটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত শেষে মাটিচাপা দেয় বন বিভাগ।
হাতি হত্যার ঘটনায় কৃষক শহিদুল ইসলামকে (৪২) আটক করা হয়েছে। সে ওই এলাকার মৃত ছোরহাব আলীর ছেলে। জানা যায় কয়েক বছর আগে শহিদুলের বাবাকে বন্যহাতির দল পা দিয়ে পিষে হত্যা করেছিল ।
স্থানীয় ও বনবিভাগসূত্রে জানা গেছে , নালিতাবাড়ী উপজেলার সীমান্তবর্তী পাহাড়ি গ্রামগুলোতে প্রায় ৪০/৫০টির একদল বন্যহাতি অন্তত দুইযুগ ধরে ফসলের মাঠে ও ঘরবাড়িতে তাণ্ডব চালিয়ে এলাকার মানুষের জানমালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করে আসছিল। এরই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে পোড়াগাঁও ইউনিয়নের বাতকুচি রাবার বাগান এলাকায় খাবারের সন্ধানে কৃষকের রোপিত আমন ধানক্ষেতে নেমে আসে। উঠতি আমন ফসল বাঁচাতে গ্রামের কৃষকরা আগে থেকেই ধানক্ষেতের আশপাশ এলাকায় একটি জেনারেটর স্থাপন করে জিআই তারের মাধ্যমে রাতের বেলায় বাল্ব জ্বালিয়ে রেখেছিল। ভুক্তভোগী কৃষকরা জানায়, বৈদ্যুতিক বাল্বের আলো দেখলে বন্যহাতির দল নাকি ধানক্ষেতে তাণ্ডব চালাতে আসতে ভয় পায়। কিন্তু বৃহস্পতিবার রাতে কোন ভাবেই ক্ষুধার্ত হাতিগুলোকে দমানো যাচ্ছিল না। হাতিগুলো খাবারের সন্ধানে ওই এলাকার ধানক্ষেতে নেমে আসলে সেখানে স্থাপিত জেনারেটরের বৈদ্যুতিক তারে জড়িয়ে ঘটনাস্থলেই ১০/১২ বছর বয়সী একটি মাদি বন্যহাতি মারা যায়। একপর্যায়ে গ্রামবাসীর প্রতিরোধের মুখে বাকি বন্যহাতিগুলো সেইস্থান ত্যাগ করলে গ্রামবাসীরা এগিয়ে গিয়ে দেখেন সেখানে একটি মাদি বন্যহাতি জেনারেটরের তারে শক খেয়ে মারা গেছে। পরে শেরপুরের সহকারী বন সংরক্ষক ও মধুটিলা ফরেস্ট রেঞ্জের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে জেনারেটর স্থাপন করে বন্যহাতি হত্যার অভিযোগে শহিদুল ইসলামকে আটক ও আরো অজ্ঞাত ১০/১২ জনের নামে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনে একটি মামলা দায়ের করেন।
এ ব্যাপারে শেরপুরের সহকারী বন সংরক্ষক সাদেকুল ইসলাম খান বলেন, বন্যহাতির মৃত্যুর খবর পেয়ে ১ নভেম্বর শুক্রবার সকালে সরেজমিনে পরিদর্শন করে জেনারেটর স্থাপন করে বন্যহাতি হত্যার প্রমাণ পাওয়া গেছে।