নালিতাবাড়ীতে ঝলমলি রানী হত্যা মামলার ২ নং আসামীকে নির্দোষ দাবী করে সংবাদ সম্মেলন
মোহাম্মদ দুদু মল্লিক, শেরপুর : শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ী উপজেলার সনাতন ধর্মাবলম্বী, মির্জাপুরে ঝলমলি রানী হত্যা মামলার ২ নং আসামীকে নির্দোষ দাবী করে মামলার বাদী’র সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ সোমবার (৯ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে ঝলমলি রানী হত্যা মামলার বাদী সপ্না রানীর উদ্যোগে উপজেলার নন্নী ইউনিয়নের কয়রাকুড়ি গ্রামে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।সংবাদ সম্মেলনে নিহত ঝলমলি রানী এর ছোটবোন সপ্না রানী লিখিত বক্তব্য পাঠ করে তিনি বলেন,আমার স্বামী রনজিৎ বর্মণ।আমাদের বিবাহের পর একটা কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। অভাব অনটন সংসার থাকায় পরবর্তীতে আমরা চলে যাই টাঙ্গাইল জেলার মির্জাপুর থানাধীন সোহাগপাড়া এলাকায়। সেখানে আমার স্বামী রনজিৎ বর্মণ তিনি নাসির গ্লাস কোম্পানীতে চাকুরী করতেন। এর আগে আমার বড়বোন ঝলমলি রানীর প্রায় ১৭ বছর আগে নালিতাবাড়ী উপজেলার বাঘবেড় ইউনিয়নের সন্যাসী ভিটা গ্রামের অমূল্য মাস্টারের পুত্র প্রাণকৃষ্ণ চন্দ্র বর্মনের সাথে বিবাহ হয়। বিবাহের পর তাদের পারিবারিক কলহ লেগেই থাকতো। ওই অবস্থায় তাদের ঘরে দুটি কন্যা সন্তান জন্ম নেয়। এর কয়েক বছর পর বড়বোন ঝলমলি, তার স্বামী প্রানকৃষ্ণ চন্দ্র বর্মন ও তাদের দুই কন্যাকে নিয়ে তারাও চলে যান সেখানে।
মির্জাপুর থানার সোহাগপাড়া বাজার সংলগ্ন জৈনক রবিন সরকারের ৬তলা বিশিষ্ঠ বাসার তৃতীয় তলার উত্তর পূর্বপাশে আমাদের পাশাপাশি রুম ভাড়া নিয়ে আমরা থাকতাম।আমার স্বামী মির্জাপুর থানাধীন নাসির গ্লাস কোম্পানিতে চাকুরী করতেন।সেই সুবাদে বোনজামাই প্রানকৃষ্ণ চন্দ্র বর্মন ও আমার বড়বোন ঝলমলি রানী তারা দু’জনও ওই কোম্পানীতে চাকুরী করতেন, আর আমি সবসময় বাসায় থাকতাম।গত ৫ জুলাই ২০১৮ সাল রাত ৯টার দিকে বাসায় আমার বোন জামাই প্রানকৃষ্ণ এবং বোন ঝলমলি রানী তাদের দুজনের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। বিষয়টি কে বা কাহারা বাসার মালিককে জানায়। পরে বাসার মালিক রবিন সরকার এসে কিছু না জেনে আমার স্বামী রনজিৎ বর্মনকে নানান রকম হুমকি প্রদান করে এবং ওই বাসা থেকে বের করে দেয়। এরপর আমার স্বামী রনজিৎ বর্মণ তার কর্মস্থল নাসির গ্লাস কোম্পানীর কর্মস্থলে নাইট ডিউটি করতে যায়। যা (সি-সিফট ডিউটি হয় রাত ১০ টা হইতে, সকাল ৬ টা পর্যন্ত)।তিনি যাবার পর আমার একমাত্র শিশু কন্যা অনুরাধা ও বড়বোনের দুই মেয়ে পিপাসা রানী ও পাপিয়া রানীকে সাথে নিয়ে আমার রুমে নিয়ে ঘুমিয়ে পড়ি। পাশের রুমে আমার বোন ঝলমলি রানী ও তার স্বামী প্রানকৃষ্ণ চন্দ্র বর্মন ঘুমিয়ে পড়েন এবং প্রাণকৃষ্ণের ড্রইং রুমে প্রাণকৃষ্ণ চন্দ্র বর্মণের পিতা অমূল্য মাস্টার, তার বোন জামাই অনুকূল তারাও ঘুমিয়ে পড়েন।পরদিন ভোর সকালে ঘুম থেকে জেগে উঠে আমি বাথরুমে যাবার সময় তাদের ঘরের দরজার দিকে তাকালে দরজাটা বাহির থেকে সিটকারি লাগানো দেখতে পাই এবং দরজার সামনে অন্যান্য দিনের মতো সেখানে কারও পায়ের সেন্ডেল ও জুতা না থাকায় সন্দেহ হয়। পরে দরজা খোলে রুমের ভেতরে গিয়ে বড়বোন ঝলমলি রাণীর গলা কাটা মৃতদেহ ও ফ্লোরে রক্ত মাখা দা পড়ে থাকতে দেখতে পাই। তাদের ড্রইংরুমে যারা রাতে ঘুমিয়েছিল সকালে কেউ ছিল না। পরে আমি চিৎকার দিলে আশপাশের লোকজন আসে। আমি অজ্ঞান হয়ে পড়ে যাই।
এরপর আমার অজান্তে বড়বোন ঝলমলি রানীর স্বামী প্রাণকৃষ্ণ চন্দ্র বর্মনকে এক নাম্বার আসামী ও আমার স্বামী রনজিৎ বর্মনকে দুই নাম্বার আসামীসহ অজ্ঞাত আরও দুই জনকে আসামী করে টাঙ্গাইল জেলার মির্জাপুর থানায় আমি সপ্না রানীকে ওই মামলার বাদী করে লিখিত একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়। এর আগে লিখিত ওই অভিযোগটি প্রস্তুত করে বাসার মালিক রবিন সরকার আমার সই নেন।আমাকে পড়তে দেয়া হয়নি লিখিত ওই অভিযোগ পত্র।বোনের হত্যা মামলার আসামী কাকে দেয়া হয়েছিল আমি কিছুই জানতাম না। পরদিন সকালে ঘটনার রাতে ডিউটি করে অফিস ছুটি হওয়ার পর নাসির গ্লাস কোম্পানীর মেইন গেইট থেকে বের হয়ে আসার সময় আমার স্বামী রনজিৎ বর্মণ কে পুলিশ গ্রেপ্তার করে এবং আমার স্বামী ২৮ মাস জেল হাজত খাটেন তিনি।আমার জানামতে বড়বোন ঝলমলি রাণীর হত্যাকান্ডের সাথে কোন ভাবেই আমার স্বামী জড়িত ছিলেন না বিধায় তিনি নিদোর্ষ। কে বা কাহাঁরা আমাদের স্বামী-স্ত্রীর সু-সম্পর্ক বিনষ্ট করতে বোনের হত্যা মামলায় আমার স্বামী রণজিৎ বর্মণকে আসামী করেছে। আমি আমার স্বামীকে নির্দোষ দাবি করছি। পাশাপাশি এ ঘটনার সাথে যারা জড়িত তদন্তের মাধ্যমে সুষ্ঠ বিচারের দাবি করছি।
আপনারা জাতির বিবেক, আমরা আপনাদের মাধ্যমে এই মামলার সুষ্ঠ বিচারের দাবি করছি। পাশাপাশি এ মামলা থেকে ২নং আসামীকে নির্দোষ জানাচ্ছি। আপনারা আপনাদের স্ব স্ব গণমাধ্যমে বিষয়টি তুলে ধরার অনুরোধ জানাচ্ছি।
ভাল লাগলে শেয়ার করুন
- Click to share on Facebook (Opens in new window)
- Click to share on Twitter (Opens in new window)
- Share on Skype (Opens in new window)
- Click to share on Google+ (Opens in new window)
- Click to share on WhatsApp (Opens in new window)
- Click to share on Telegram (Opens in new window)
- Click to share on LinkedIn (Opens in new window)
- Click to share on Pocket (Opens in new window)
- Click to email this to a friend (Opens in new window)
- Click to print (Opens in new window)