নকলায় আ’লীগ মনোনীত প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে বিক্ষোভ, সংবাদ সম্মেলন
নকলা (শেরপুর) প্রতিনিধি : শেরপুরের নকলা উপজেলার ১ নং গনপদ্দী ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রাথমিক ভাবে মনোনীত প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে একাট্টা হয়ে মাঠে নেমেছেন ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীসহ সর্বস্তরের ভোটারবৃন্দ।
এ উপলক্ষে বুধবার (২৭ অক্টোবর) বিকেলে গনপদ্দী ইউনিয়ন পরিষদ প্রাঙ্গনে প্রাথমিক ভাবে মনোনীত করা আওয়ামী লীগের প্রার্থী পরিবর্তের পক্ষের জনতা এক বিক্ষোভ সমাবেশ ও সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা আকরাম হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে আবেগময় ও অভিযোগের সুরে বক্তব্য রাখেন- গনপদ্দী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক সৈয়দ শাহজাহান আহাম্মেদ, যুগ্ম সম্পাদক আনোয়ার হোসেন রাশেদ, ইউনিয়ন আওয়ামী যুব লীগের সভাপতি আশরাফুজ্জামান রাসেল, গনপদ্দী ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আমীর হামজা ও যুব নেতা সাইফুল ইসলাম সরকার লিটন প্রমুখ।
তাঁরা জানান, ৩য় ধাপের ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নকলা উপজেলার ৯টি ইউনিয়নের জন্য আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী হিসেবে ১ নারী সহ প্রাথমিক ভাবে ৯জনকে মনোনীত করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন বোর্ড। এর মধ্যে ১ নং গনপদ্দী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে প্রথমিক ভাবে দলীয় মনোনয়ন পায় বর্তমান চেয়ারম্যান সামছুর রহমান (আবুল)। এতে ইউনিয়নবাসীদের মধ্যে চরম হতাশা বিরাজ করছে বলে তারা মন্তব্য করেন।
বক্তাদের মধ্যে অনেকে বলেন, বর্তমান চেয়ারম্যান সামছুর রহমান আবুল বহুল বিতর্কিত ও জনবিচ্ছিন্ন একজন চতুর প্রকৃতির লোক। দুর্নিতীর জন্য তার বিরুদ্ধে দুদকের মামলা পর্যন্ত হয়েছে। অথচ অদৃশ্য ক্ষমতার বলে সে আবারো কীভাবে ঐতিহ্যবাহী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী হিসেবে প্রাথমিক মনোনয়ন পায় ? এমন প্রশ্ন তাদের। এটা মনোনয়ন বঞ্চিত প্রার্থীরা ও এলাকাবাসীরা কোন ক্রমেই মেনে নিতে পারছে না। তারা আরো বলেন, একজন চেয়ারম্যান হিসেবে সে এতোটাই অযোগ্য যে চলতি মেয়াদে তার বিরুদ্ধে গনপদ্দী ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যবৃন্দ সংবাদ সম্মেলন করার পাশাপাশি তার প্রতি অনাস্থা প্রকাশের মতো ঘটনা ঘটেছে। যা বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ হয়। যে জনপ্রতিনিধির প্রতি ইউনিয়নবাসীর আস্থা নেই, নেই তার পরিষদের সদস্যবৃন্দের সাথে সমন্বয়। এমন লোককে পুনরায় নৌকার মনোনয়ন দিলে, শুধু মাত্র নৌকার মাঝির কারণেই এই ইউনিয়নে নৌকার ভরাডুবি হতে পারে বলে তারা মনে করেন। তাই চূড়ান্ত মনোনয়ন দেওয়ার আগে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ইতিহাস ঐতিহ্যের কথা বিবেচনা করে ও গনপদ্দী ইউনিয়ন বাসীর দাবী পূরণের জন্য বিতর্কিত ও জনবিচ্ছিন্ন এ লোককে জোর দাবী জানান বক্তারা।
এলাকাবাসী ও সর্বস্তরের ভোটাররা বলেন, সামছুর রহমান আবুলকে ছাড়া, যে কাউকে দলীয় মনোনয়ন দিলে আমাদের ইউনিয়নে নৌকার জয় যতোটা নিশ্চিত, পক্ষান্তরে সামছুর রহমান আবুলকে নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন দিলে পরাজয়টাও ঠিক ততোটাই নিশ্চিত।
এমতাবস্থায় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও তার অঙ্গ সহযোগী সয়গঠনের সকল নেতাকর্মীদের দাবী গনপদ্দী ইউয়িন পরিষদ নির্বাচনে সামছুর রহমান আবুলকে নৌকা প্রতীকে চুড়ান্ত মনোনয়ন না দিয়ে বরং অন্য যে কাউকে নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন দিলে সর্বস্তরের ভোটাররা স্বত:স্ফুর্ত ভাবে নির্বাচন কার্যক্রমে অংশগ্রহন করবে। নতুবা এই ইউপিতে নৌকা প্রতীকের পরাজয় অনেকটাই নিশ্চিত। তাই শেরপুর জেলার নকলা উপজেলার ১ নং গনপদ্দী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চূড়ান্ত মনোনয়ন দেওয়ার আগে পূর্ণবিবেচনার জন্য জোর দাবী জানান তারা।
সংবাদ সম্মেলনের পরে গনপদ্দী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রাথমিক ভাবে মনোনীত প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ ও আলোচনা সভা করা হয়।
এ বিক্ষোভ সমাবেশ ও আলোচনা সভায় গনপদ্দী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক সৈয়দ শাহজাহান আহাম্মেদ, যুগ্ম সম্পাদক আনোয়ার হোসেন রাশেদ, ইউনিয়ন আওয়ামী যুব লীগের সভাপতি আশরাফুজ্জামান রাসেল, গনপদ্দী ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আমীর হামজা ও যুব নেতা সাইফুল ইসলাম সরকার লিটন, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক শাহাজামাল, পিপড়ী কান্দি এলাকাবাসীর পক্ষে আশরাফ আলী ও মনির হোসেন, বিহাড়িরপাড় এলাকাবাসীর পক্ষে শহিদুল ইসলাম, মিজানুর রহমান, মেদীরপাড় এলাকাবাসীর পক্ষে ২নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক চাঁন মিয়া, চিথলিয়া গ্রামবাসীর পক্ষে ইউপি সদস্য খোকা মিয়া, ইউপি সাবেক সদস্য ও ৪নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি রফিজ উদ্দিনসহ অনেকে বক্তব্য রাখেন।
এসময় জেলা ও উপজেলায় কর্মরত বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিকস ও প্রিন্ট মিডিয়ার অর্ধশাতাধিক সাংবাদিকসহ বিভিন্ন বয়স ও শ্রেণির দুই সহস্রাধিক নারী-পুরুষ ভোটার উপস্থিত ছিলেন।