নকলায় নিহত পোশাক শ্রমিকের পরিবারের পাশে জেলা-উপজেলা প্রশাসন
মো. নুর হোসাইন নকলা (শেরপুর) প্রতিনিধি : শেরপুরের নকলায় সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত পোশাক শ্রমিক সোহাগের বাড়িতে গিয়ে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন তার পরিবারের সদস্যদের খোঁজ খবর নেওয়ায় ও আর্থীক সহায়তা প্রদান করায় কিছু সময়ের জন্য হলেও পুত্র শোক ভুলে ছিলেন শোকাহত বাবা-মা এবং স্ত্রী-সন্তানসহ আত্মীয় স্বজন।
রবিবার (পহেলা আগস্ট) সকালে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাহিদুর রহমান উপজেলার বানেশ্বরদী ইউনিয়নের মোজারকান্দা গ্রামের পোশাক শ্রমিক নিহত সোহাগের বাবা আতশ আলীর বাড়িতে গিয়ে শোক প্রকাশ করেন।
তাছাড়া জেলা প্রশাসক মো. মোমিনুর রশীদ মোবাইল ফোনে এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদুর রহমান সরাসরি সোহাগের পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলে মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনার পাশাপাশি শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।
এর পরে সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত পোশাক শ্রমিক সোহাগের বাবা-মায়ের হাতে জেলা প্রশাসক মো. মোমিনুর রশীদ-এঁর পক্ষে নগদ ২০ হাজার টাকা আর্থীক সহায়তা তুলেদেন ইউএনও জাহিদুর রহমান। এসময় নিহত সোহাগের মা-বাবা আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।
এসময় উপজেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান-প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ও বানেশ্বরদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাজহারুল আনোয়ার মহব্বত, ইউপি সদস্য মোফাখখারুল ইসলাম ও শাহজাহান মিয়া, নকলা প্রেসক্লাবের সভাপতি মো. মোশারফ হোসাইন, যুগ্ম সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. ফজলে রাব্বী রাজন ও সদস্য রাইসুল ইসলাম রিফাত, স্থানীয় মুরুব্বী সিরাজুল ইসলাম, সাবেক ব্র্যাক কর্মকর্তা নজরুল ইসলামসহ এলাকার গন্যমান্যরা নিরাপদ সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে উপস্থিত ছিলেন।
জেলা ও উপজেলা প্রশাসন সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত পোশাক শ্রমিক সোহাগের পরিবারের খোঁজ খবর নেওয়ায় ও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আর্থীক সহায়তা প্রদান করায় কিছু সময়ের জন্য হলেও পুত্র শোক ভুলে ছিলেন শোকাহত বাবা-মা এবং সোহাগের রেখে যাওয়া স্ত্রী ও ৩ বছর বয়সী সন্তানসহ আত্মীয় স্বজনরা; এমনটাই জানান অনেকে। সোহাগের শোকাহত বাবা আতশ আলী জানান, তার পরিবারের আয়ের একমাত্র ছেলে মারা যাওয়ায় আজ তারা অসহায় হয়ে গেছে। তিনি বলেন, ডিসি স্যার, ইউএনও স্যার, ইউনিয়ন চেয়ারম্যানসহ আপনারা আমাদের খোঁজ খবর নেওয়ায় আমরা কিছু সময়ের জন্য হলেও ছেলে হারানোর শোক ভুলে ছিলাম।
বানেশ্বরদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাজহারুল আনোয়ার মহব্বত জানান, ৩/৪ বছর আগের এই অসহায় পরিবারের জন্য উপার্জনের একমাত্র লোক ছিলো পোশাক শ্রমিক সোহাগ মিয়া। সে সড়ক দূর্ঘটনায় মারা যাওয়ায় পরিবারটি আবার অসহায় হয়ে গেলো। এই পরিবারের দিকে সবসময় সুদৃষ্টি রাখবেন বলে তিনি আশ্বস্থ করেন। তাছাড়া নিহত সোহাগের আহত স্ত্রী-সন্তানের আপাতত চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবেন বলে তিনি জানান।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদুর রহমান বলেন, ওই সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত সোহাগের স্ত্রী ও তার এক শিশু সন্তান ছিলো। শিশু সন্তানটি হাতে ও গলায় এবং স্ত্রী কোমরে ও বুকে আঘাত পেয়ে আহত হয়েছেন। তারা ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়িতে ফিরে এসেছেন। তবে সুস্থ্য হতে চিকিৎসার জন্য তাদেরকে শেরপুর জেলা সদর বা নকলা হাসপাতালে ভর্তি হতে পরামর্শ দেন। এরজন্য ডাক্তারের সাথে কথাবলে দিবেন বলে তিনি জানান।
উল্লেখ্য, পোশাক শ্রমিক সোহাগ মিয়া (৩০) তার উপার্জনের একমাত্র মাধ্যম পোশাক শিল্পের চাকরি বাঁচাতে যাওয়ার পথে ফুলপুর ও তারাকান্দা উপজেলার মধ্যবর্তী কোন এক এলাকায় শনিবার সকাল সোয়া ৮টার দিকে তাদের ট্রাকটিকে অন্য একটি ট্রাক ধাক্কা দিলে সোহাগ ও মিন্টু মিয়াসহ বেশ কয়েকজন ছিটকে রাস্তায় পড়ে যায়। ঠিক এসময় পিছন থেকে আসা দ্রুতগামী একটি ট্রাক সোহাগ মিয়ার ওপর ওঠে পড়ে। এতে ঘটনাস্থলেই সে মারা যায়। বাকিদের গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন স্থানীয়রা।
ভাল লাগলে শেয়ার করুন
- Click to share on Facebook (Opens in new window)
- Click to share on Twitter (Opens in new window)
- Share on Skype (Opens in new window)
- Click to share on Google+ (Opens in new window)
- Click to share on WhatsApp (Opens in new window)
- Click to share on Telegram (Opens in new window)
- Click to share on LinkedIn (Opens in new window)
- Click to share on Pocket (Opens in new window)
- Click to email this to a friend (Opens in new window)
- Click to print (Opens in new window)