শ্রীবরদীতে অবৈধ ইটভাটা বন্ধের দাবীতে এলাকাবাসীর অভিযোগ
শ্রীবরদী (শেরপুর) প্রতিনিধি:
শ্রীবরদীতে অবৈধ ইটভাটা বন্ধের দাবীতে প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেছে এলাকাবাসী। ৬নং শ্রীবরদী সদর ইউনিয়নের নয়ানী শ্রীবরদী গ্রামে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ও প্রশাসনের অনুমতি ছাড়াই গড়ে উঠেছে মেসার্স জালাল উদ্দিন ব্রিকস নামে ইটভাটা। বিদ্যালয়, বাজার, লোকালয়ে ও তিন ফসলি জমিতে দীর্ঘ দিন যাবত ওই ভাটাটি পরিচালনা করে আসছে পৌর শহরের সাতানী শ্রীবরদী মহল্লার মৃত পচা মিয়ার ছেলে মো: জালাল উদ্দিন। ইটভাটাটি স্থাপনের সময় অভিযোগ করলেও কোন প্রতিকার পাননি এলাকাবাসী।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, জালাল উদ্দিন সরকারি নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাদরাসা, মসজিদ, জনবসতি এলাকায় ও তিন ফসলি কৃষি জমিতে অবৈধভাবে ‘মেসার্স জালাল ব্রিকস’ নামে একটি ইটভাটা স্থাপন করে। ইটভাটাটি স্থাপনের সময় এলাকাবাসী বাদী হয়ে প্রশাসন সহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দেয়। অভিযোগ দাখিলের পরেও ইটভাটার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় ইটভাটাটির কার্যক্রম চলমান থাকে। মেসার্স জালাল ব্রিকসের আশেপাশে নয়ানী শ্রীবরদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দক্ষিণ নয়ানী শ্রীবরদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, স্বতন্ত্র এবতেদায়ী মাদরাসা, কিয়ামতলি বাজার, জামে মসজিদসহ বিভিন œস্থাপনা রয়েছে। আবদ্ধ ঘরে কয়লা ভাঙ্গার কথা থাকলেও খোলামেলা পরিবেশে ভাঙ্গা হচ্ছে। এছাড়াও ইটভাটার কালো ধোয়া ও ধূলোবালির কারণে ফসল ও পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে এবং জনস্বাস্থ্যে হুমকির মুখে পড়েছে। মেসার্স জালাল ব্রিকস এর স্বত্ত¡াধিকারী মো: জালাল উদ্দিন পরিবেশ অধিদপ্তর, ময়মনসিংহ বিভাগীয় কার্যালয় ময়মনসিংহে পরিবেশগত ছাড়পত্রের জন্য আবেদন করেন। পরিবেশ অধিদপ্তর, শেরপুর জেলা কার্যালয় মেসার্স জালাল ব্রিকসটি সরেজমিনে তদন্ত করে ইট প্রস্তুত ও ভাটাস্থাপন (নিয়ন্ত্রন) (সংশোধন) আইন- ২০১৯ এর ধারা ৮(৩) (ক) এবং ৮(৩)(ঙ) অনুযায়ী ইটভাটাটির ০১(এক) মি:মি: এর মধ্যে আবাসিক এলাকা, উর্বর কৃষি জমি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিদ্যমান থাকায় ইটভাটাটির অনুকুলে দাখিলকৃত পরিবেশগত ছাড়পত্রের আবেদনটি না মঞ্জুর করা হয়। এমনকি অবিলম্বে ভাটাটির সকল কার্যক্রম সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করে স্থাপনা অন্যত্র স্থানান্তরের জন্য গত ১৬ ফেব্রæয়ারী ২০২০ তারিখে মেসার্স জালাল ব্রিকসের স্বত্ত¡াধিকারী মো; জালাল উদ্দিনকে নির্দেশ দেন। কিন্তু পরিবেশ অধিদপ্তরের ওই সিদ্ধান্তকে বৃদ্ধাঙ্গালী দেখিয়ে ইটভাটার কার্যক্রম বন্ধ না করে অদ্যবধি পর্যন্ত ইট প্রস্তুত ও ইট পুড়িয়ে যাচ্ছেন। দ্রæত ইটভাটা বন্ধ না হলে এলাকাবাসী ও কোমলমতি শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য ঝুকিসহ এলাকার ব্যাপক ক্ষতি সাধন হবে। এলাকাবাসী ইটভাটাটি বন্ধের জন্য প্রতিবাদ করলে মো: জালাল উদ্দিন তার লোকজন দিয়ে এলাকাবাসীকে মামলা দিয়ে হয়রানিসহ বিভিন্নভাবে ভয় ভীতি প্রদর্শন করে। সম্প্রতি ইটভাটার পাহাড়াদার সোহেল ওরফে বাবুর লাশ উদ্ধার হয়। এ ঘটনায় ইটভাটা মালিকের ছেলে হারুনুর অর রশিদ সাদা ও হাফিজুর রহমান এবং ইটভাটা ম্যানেজার ই¯্রাফিলকে আটক করেছে পুলিশ। দ্রæত ওই অবৈধ ইটভাটা বন্ধের দাবী তুলেছে এলাকাবাসী। মেসার্স জালাল উদ্দিন ব্রিকসের মালিক মো: জালাল উদ্দিন বলেন, আমি ইটভাটা বন্ধের কোন নোটিশ পাইনি। পরিবেশ অধিদপ্তর শেরপুর জেলার কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো: রাসেল নোমান বলেন, জালাল উদ্দিন ব্রিকস সহ একাধিক ইটভাটার মালিক ছাড়পত্রের জন্য আবেদন করেন। ইট প্রস্তুত ও ভাটাস্থাপন (নিয়ন্ত্রন) (সংশোধন) আইন- ২০১৯ এর ধারা ৮(৩) (ক) এবং ৮(৩)(ঙ) অনুযায়ী তাহাদের আবেদন গ্রহণযোগ্য না হওয়ায় আবেদন না মঞ্জুর করে চিঠি দেওয়া হয়েছে। তবে কেউ যদি আইন লঙ্ঘন করে ইটভাটা পরিচালনা করেন তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিলুফা আক্তার বলেন, অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ পেয়েছি, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।