চট্রগ্রামের হালি শহরের চা এখন শেরপুরের পাকুড়িয়ায়
নাজমুল হোসাইন, শেরপুর : চট্রগ্রামের হালি শহরের চা এখন শেরপুর জেলার সদর উপজেলার পাকুরিয়া ইউনিয়নে। জানা যায়, হারুন আলী গত ৩৫ বছর চট্রগ্রাম বিভাগের হালির শহরে এক লন্ড্রীর দোকানে কাজ করতেন। ওই সময় হারুন আলীর পরিবার পরিজন নিয়ে চট্রগ্রামে বসবাস করতেন। মহামারী করোনা ভাইরাসের মোকাবিলা কর্ম হারান হারুন আলী । তার পর কিছু দিন কর্মহীন অবস্থায় চট্রগ্রামে হালির শহরের এক চায়ের দোকানে কাজের সুবাদে তিনি মালাই কাঁচা মরিচের চা,তেঁতুলের কাঁচা-মরিচের ঝাল চা,সবমিলিয়ে তিনি ৪ থেকে ৫ ধরনের চা তৈরি করা শিখেন। সেখানেও হারুন আলীর বেশি দিন কর্মস্থলে থাকা সম্ভব হয়নি। মহামারী করোনা ভাইরাসের মধ্যেই পরিবার পরিজন নিয়ে চলে আসেন নিজ এলাকা শেরপুর সদর উপজেলার পাকুড়িয়া ইউনিয়নের পূর্বপাড়া গ্রামে। নিজ এলাকায় এসে কোন কাজকর্ম না পেয়ে হারুনের মনে পড়ে চট্টগ্রামের হালির শহরের চায়ের দোকানে চায়ের ব্যবসার কথা। চায়ের দোকান করার মতো তার কাছে নগদ কোন টাকা ছিলো না। দেরি না করে তার ছোট রান্নার ঘরটি ভেঙে নিয়ে বাড়ীর পাশে রাস্তা সংলগ্ন স্থাপন করে সেখানে শুরু করে সেই চায়ের দোকান।
দোকান শুরুর পর থেকে তা দোকানে প্রতিরাতে মটরসাইকেল,প্রাইভেটকার, বেটারী চালিত অটো রিক্সাসহ বিভিন্ন যানবাহনের মাধ্যমে শেরপুর শহরে নবীনগর, নিউমার্কেট, ঢাকলহাটী, বিভিন্ন জায়গা থেকে বিভিন্ন পেশার মানুষজস মালাই কাচা-মরিচ চা, তেতুলের কাচা-মরিচের ঝাল চা খেতে তার দোকানে আসে। পাকুড়িয়া ইউনিয়নসহ ধলা, গাজীরখামার, ভাতশালাসহ বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে বিভিন্ন পেশার মানুষ দল বেঁধে আসে চা খেতে। সকাল থেকে মধ্য রাত পযর্ন্ত চায়ের দোকানটি খোলা থাকে। যাদের হাই-পেশার/সর্দি কাশি আছে তারা তেতুল চা, কাঁচা মরিচের ঝাল চা, মালাই কাঁচা-মরিচের চা খেতে আসেন প্রতিনিয়ত । তান দোকানের আশ-পাশের খোলা-মেলা মনোরম-পরিবেশ খোলা-বাতাসের নিচে বসে চা-খেয়ে কাস্টমারদের মন ভরে যায়। বেশ কিছু দিন আগে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকাতে “তেঁতুল কাঁচা-মরিচের ঝাল চা,মানুষের মনে ভয়ভীতও কমেছে ” শিরোনামে হারুনের চায়ের দোকানের সংবাদ প্রকাশিত হওয়ায় চা দোকানটির নাম চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে। এখন তার দোকানের কাস্টমারের সংখ্যাও দ্বীগুন। প্রতিদিন তার দোকানে ৩ থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। তাতে তার দৈনিক ১ হাজার টাকা লাভ হয়। এখন সে তান দু-ছেলে-মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে বেশ সুখেই দিনাতিপাত করছেন। এ ব্যাপারে হারুন মহান সৃষ্টিকতার্ কাছে শোকরিয়া আদায় করে বলেন, পথ পথিকের সৃষ্টি করেনা, পথিকই পথের সৃষ্টি করে।