ঝিনাইগাতী হাসপাতাল নানা সমস্যায় জর্জরিত
মুহাম্মদ আবু হেলাল, শেরপুর : প্রায় ২ লক্ষ লোকের চিকিৎসার একমাত্র আশ্রয়স্থল শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলা ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল। হাসপাতালটি ৩১ থেকে ৫০শয্যায় এ উন্নীত করা হলেও নানান সমস্যায় জজর্রিত হয়ে হাসপাতালটি নিজেই রোগীতে পরিণত হয়ে পড়েছে। ডাক্তার সংকটের কারণে খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলছে স্বাস্থ্য সেবা। ফলে স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে উপজেলাবাসী।
হাসপাতাল সুত্রে জানা যায়, এ হাসপাতালটি ৩১ শয্যা থেকে ৫০ এ উন্নীত করা হলেও ৩১ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল চালাতে যে জনবল প্রয়োজন, বতর্মানে সেটাও নেই। বিধি মোতাবেক ১৭ জন ডাক্তার থাকার কথা থাকলেও আছে ৭জন। এই ৭ জনের মধ্যে পেষনে -৩ জন, ছুটিতে – ১জন, কমর্রত আছেন -৪ জন। ১৫ জন সেবিকার মধ্যে -৩ জনের পদ শূন্য হলেও ছুটিতে -৩ জন, পেষনে-১ জন কমর্রত ৯ জন। উপ- সহকারী পদে ৯ জন থাকার কথা থাকলেও আছে ৫ জন। মেডিক্যাল টেকনোলোজি ল্যাবে- ২ জনের মধ্যে আছে -১ জন, অফিস সহকারী পদে ৩ জনের বিপরীতে আছে -১ জন। ক্যাশিয়ার পদটিও শূণ্য। নৈ:শ প্রহরী ২ টি পদই শূণ্য। আয়া/ এলএমএসএস পদে ৮ জনের মধ্যে আছে ৪ জন। বাবুচি ২ জনের মধ্যে আছে ১ জন। ঝাড়ুদার ৫ জনের স্থানে আছে ২ জন। ড্রাইভার পদটিও দীঘদিন ধরে শূণ্য।
সবকিছু মিলিয়ে এতগুলো পদ শূণ্য পদ নিয়ে হাসপাতালটি নিজেই এখন রোগাক্রান্ত। ঝিনাইগাতী উপজেলার ৭ ইউনিয়নের প্রায় ২ লক্ষ লোকের বসবাস। প্রত্যন্ত গ্রাম-গঞ্জ থেকে বহু আশা আকাঙ্ক্ষা নিয়ে রোগীরা ছুটে আসেন হাসপাতালে। পর্যাপ্ত ডাক্তার না থাকার কারণে উপ- সহকারীদের উপর ভরসা করা ছাড়া আর কোন উপায় থাকেনা। এক্সরে মেশিন ও অপারেটর থাকার সত্বেও যান্ত্রিক ত্রূটিক কারনে এক্সরে ও ইসিজি করতে হয় বাইরে থেকে।
সরকারী ছুটির দিন ব্যতিত সকাল ১০ ঘটিকার দিকে যখন বর্হি বিভাগে প্রচন্ড রোগীর ভীড় জমে, ঠিক সে সময়ে বিভিন্ন ঔষধ কোম্পানীর প্রতিনিধিরাও উপস্থিত হয়ে সাধারণ রোগীদের স্বাস্থ্য সেবা নিতে বারোটা বাজিয়ে দেন। কেননা রোগীদের বাইরে দাড়ি করিয়ে রেখে ঔষধ কোম্পানীর প্রতিনিধিদের সাথে সময় দেন ডাক্তাররা। এছাড়া ইমার্জেন্সি বিভাগেও স্থানীয় দালালদের দৌরাত্ব দেখা যায়।
এ ব্যাপারে উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ- সভাপতি ও উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের সাধারণ সম্পাদক ফকির মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, আমরা ঝিনাইগাতীবাসী এমনিতেই সকল দিক থেকে দুবর্ল ও অবহেলিত। পাশাপাশি এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগীরা যখন চিকিৎসা নিতে আসেন, তখন তাদের সাথে সৌজন্যমূলক আচরণ করা হয়না। আমি একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে উপজেলাবাসী তাদের মৌলিক অধিকার (চিকিৎসা)থেকে যেন বঞ্চিত না হয়, সে দিকটার প্রতি নজর দেওয়ার জন্য উধ্বর্তন কতৃর্পক্ষের দৃষ্টি আকর্ষন করছি।
ঝিনাইগাতী হাসপাতালের ইউএইচএফপিও ডা. মো. জসিম উদ্দিন ডাক্তার ও কর্মচারী সংকটের কথা স্বীকার করে বলেন, আমি দ্বায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে সাধ্যমত চিকিৎসা সেবা দিতে চেষ্টা করছি। আমি লিখিত ভাবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে বিষয়গুলো জানিয়েছি। জনবলের ঘাটতি পুরণ হলে এসব সমস্যা আর থাকবেনা।
উপজেলাবাসী অত্র হাসপাতালের সমস্যাগুলো দুরীকরণে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের উধ্বতন কতৃর্পক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।