ঝিনাইগাতীতে লকডাউনের বিধিনিষেধে মুচিদের মানবেতর জীবনযাপন
মুহাম্মদ আবু হেলাল, শেরপুর : লকডাউনের বিধিনিষেধে মানবেতর জীবনযাপন করছে ঝিনাইগাতী উপজেয়ায় কমরত মুচি সমাজ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার সদর বাজারের মডেল সরকারী প্রাথমিক
বিদ্যালয়ের সামনে মেইন রোডের পশ্চিম পাশে ফুটপাতে জুতা-স্যান্ডেল সেলাইয়ের কারিগর মুচি শিপন, শান্ত, মছম রবিদাস,মিন্টু রবিদাস, শংকর ও সম্ভুরা বসে অলস সময় পাড় করছেন।
জুতা-স্যান্ডেলের সেলাইয়ের জন্য দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করছেন। সাধারনের মাঝে আছে ছুটাছুটি, দৌড়ঝাপ কিন্তু জুতা সেলাই করতে আসছেন না কেহ। চলমান লকডাউনের বিধি নিষেধে জরুরী প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছে না মানুষ।
মানুষের ছুটাছুটি থাকলেও আসছে না কেহ জুতা-স্যান্ডেল সেলাই করতে। ফলে কাজের অভাবে আয় রোজগার কমে যাওয়ায় এসব নিম্ন আয়ের মানুষের দিন কাটছে অনাহারে
অর্ধহারে।
শনিবার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,
ফুটপাতে উপর বিছানো
নিজ নিজ দোকানে চুপচাপ বসে আছে এ সব জুতা-স্যান্ডেল সেলাইয়ের কারিগর মুচিরা। কেমন আছেন? জিজ্ঞাসা করতেই তারা বলেন, কেমন আর থাকবো? আগে এখানে বসেই প্রতিদিন ৪থেকে ৫শত টাকা আয় করতাম। চলমান লকডাউনের কারণে মানুষ জুতা-স্যান্ডেল, ব্যাগ সারতে আসছেন না। সে কারণে আমাদের আয় রোজগার নেই বল্লেই চলে।
এ সময় ফুটপাতে বসে জুতা-স্যান্ডেল সেলাইকারী শিপন জানান, “সকাল ৭টায় আইছি। এখন বেলা ১২টা। বিকাল ৪ টায় আবার দোকান বন্ধ করতে হবে। জুতা-স্যান্ডেল সেলাই আর কালি করে যে সামান্য আয় হয় তা দিয়েই চলে আমাদের সংসার।
মুচিরা উপজেলার তারা রাংটিয়া পাহাড়ে ও বিভিন্ন পাড়া মহল্লায় বসবাস করলেও তাদের আয়ের আর অন্য কোন উৎস নেই।
জুতা-সেন্ডেল সেলাইকারী মুচি শান্ত জানায়, বাড়িতে মা-বাবা ও ২ ছেলে আছে। তার আয় দিয়েই সংসার চলে। সকাল সাতটায় এসে এখন সময় দুপুর ১২ টা কাজ করেছেন মাত্র ৫০ টাকা।
বানুর বাড়িতে মা, স্ত্রী ও ২ সন্তান আছে। কাজ করেছেন মাত্র ৪০ টাকা। মচম রবিদাসের বাড়িতে স্ত্রী ও ৩ সন্তান আছে। কাজ করেছেন মাত্র ৪৫ টাকা। সিধু রবিদাসের স্ত্রীসহ বাড়িতে সদস্য আছেন ৬ জন । কাজ করেছেন মাত্র ৩০ টাকা। মিঠু দাসের পরিবারে সদস্য আছে ৬ জন। কাজ করেছেন মাত্র ৪০ টাকা । শংকর রবিদাসের স্ত্রী সহ ৬জন। কাজ করেছেন ৮০ টাকা। সম্ভু কাজ করেছেন মাত্র ১৫ টাকা।
তারা সকলেই জানান, লক ডাউনের কারনে বাজারে মানুষজন কম বের হওয়ায় জুতা সেলাইয়ের কাজ অনেক কমে গেছে। আয় উপার্জন কম হওয়ায় পরিবার -পরিজন লইয়া খাইয়া না খাইয়া দিন কাটাইতেছি। সামান্য আয় দিয়ে কিভাবে সংসার চলবে সে চিন্তায় তারা চিন্তিত। সে কারণে ঝিনাইগাতীতে কমর্রত মুচিদের লক ডাউন চলাকালে প্রশাসনের কাছে ত্রানের আবেদন জানান।